হ্যালো বন্ধুরা, আজকে আমরা সম্রাট অশোকের ধর্মনীতির পরিচয় দাও এই প্রশ্নের উত্তরটি বিস্তারিত ভাবে এই পোস্টে আলোচনা করছি । উত্তরটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই উত্তরটি প্রথম থেকে শেষ অব্দি মন দিয়ে পড়ুন এবং বন্ধুদের সাথেও শেয়ার করুন ।
সম্রাট অশোকের ধর্মনীতির পরিচয় দাও

কলিঙ্গ যুদ্ধ অশোকের আদর্শ ও মানবতার এক বিশেষ উল্লেখযোগ্য ছাপ ফেলে । অর্থাৎ তার সাম্রাজ্যবাদী মনোভাব ও হিংসার আদর্শ বিলুপ্ত করে শান্তিবাদী নীতি গ্রহণ করেন । বৌদ্ধ ধর্মের মহান নীতিগুলির সাথে বাস্তব নীতির মাধ্যমে তার মহান ‘ ধম্ম’ নীতির প্রবর্তন করেন ।
অশোকের ধম্মনীতি
রাজশ্রী অশোক তার প্রজাবর্গকে সন্তান তুল্য মনে করতেন । 261- 260 খ্রীঃ পূঃ কলিঙ্গ যুদ্ধ অশোকের সাম্রাজ্যবাদী মনোভাব সম্পূর্ণ পাল্টে দেয় । এরপর তিনি অহিংস শান্তিবাদী বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেন । অশোক তার এই ধর্মীয় নীতিকে ধম্ম বলে অভিহিত করেছেন এবং এই ধম্ম প্রচারে তিনি অনারম্ভ প্রাণায়াম বা প্রানী হত্যা না করা এবং ‘অভিহিত ভূতনাম’ বা জীবিত প্রাণীর ক্ষতি না করার নীতি গ্রহণ করেন । পাথরের স্তম্ভের ওপর ধর্মীয় বাণী খোদাই করে প্রচার করার আদেশ দেন ।
সমসাময়িক বৈদিক, বৌদ্ধ এবং জিন ধর্মীয় বিশ্বাসের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি প্রতিক্রিয়া হিসেবে ‘ধম্ম’ এর ধারণা সৃষ্টি হয় । এই নতুন ভাবাদর্শ সৃষ্টির লক্ষ্যে অশোক প্রচলিত বিশ্বাস ও চিন্তা থেকে তাঁর মূল্যবোধ গ্রহণ করেন এবং ধম্ম এর সঙ্গে সংশ্লেষ ঘটান । ফলে অশোক বিশাল সাম্রাজ্য বহুবিধ ধর্মীয় সাংস্কৃতিক , নৃতাত্ত্বিক ও সামাজিক ব্যাবস্থার সংমিশ্রণ ঘটে এবং তাঁর রাজ্য জনগণ প্রত্যেকেই তাদের স্ব স্ব অবস্থানে নিরাপদ ছিলেন ।
আরও পড়ুন- সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযানের কারণ ও ফলাফল
‘ধম্ম’ র মূল নিতিগুলি এমন ছিল যে , প্রত্যেক ধর্ম, বর্ণ ও মতালম্বীদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছিল । ধম্মের মূল বাণী ছিল ‘সহনশীলতা’ । অশোকের মতে প্রত্যেক মানুষ ও তাদের বিশ্বাস ও ভাবধারার মাঝে সহনশীলতার ধারণা সম্প্রসারিত হওয়া প্রয়োজন । দাস ও ভৃত্যের প্রতি শ্রদ্ধা, শিক্ষার প্রতি সম্মান ও তাদের সাহাজ্যদান প্রভৃতির প্রতি সদাচারের পরামর্শ দেন । অর্থাৎ তাঁর প্রধান দায়িত্ব হল সকল ধর্মের কল্যাণ ও নিরাপত্তার কথা চিন্তা করা ।
রাজশ্রী তার রাজত্বের ত্রয়োদশ বছরে ‘ পঞ্চম প্রস্তর’ লেখর মাধ্যমে ‘ধম্ম’ র আদর্শ প্রচার শুরু করেন । এই লিপিতে অশোক বন্দিদের প্রতি দয়া প্রদর্শনের জন্য রাজকর্মচারীদের নির্দেশ দেন । যেসকল বন্দির সন্তান সন্ততি আছে, যারা বৃদ্ধ, দুর্বল ও অসুস্থ তাদের মুক্তি দেন । তিনি তাদের একাধিক লিপিতে মানবজাতির কল্যাণে ও সুখশান্তি প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা ব্যাক্ত করেন । তার ধম্ম চিন্তার মূলে ছিল প্রত্যেক ধম্ম ও ধর্মাচরণের প্রতি সহনশীলতা, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা । তিনি তার দ্বিতীয় লিপির মাধ্যমে শুধু মানুষ, পশুপাখির প্রতি দয়া প্রদর্শন নয় বরং উদ্ভিদ জগতের প্রতিও সহনশীলতা হওয়ার নির্দেশ দেন । তিনি ফলদায়ক বৃক্ষ, ওষধি ও লতাগুল্ম এবং জ্বালানীর জন্য বৃক্ষ রোপণের নির্দেশ দেন ।
রাজুক বা সাম্রাজ্যের আঞ্চলিক কর্মচারীদের সমন্বয়ে গঠিত সংঘ ছিল ধম্ম । রাজুকরা ঢাক পিটিয়ে জনগণের মধ্যে শ্রমন জারি করেন এবং ঘোষণা করতেন যে বাবা, মা এবং শিক্ষককে অবশ্যই মনে করতে হবে এবং সবসময় কথা বলতে হবে ।
তবে অশোকের ধম্মের অর্থাৎ মনের ওপর বিভিন্ন ব্যাক্তিবর্গের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছিল । তবুও বলা যায় সমন্বয় সাধনের উপায় হিসেবে ধম্ম ছিল অত্যন্ত্য অস্পষ্ট । তাই সামাজিক উত্তেজনা অথবা সাম্প্রদায়িক বিরোধ ‘ধম্ম’ দূর করতে পারেনি । তবুও অশোকেই প্রথম একটি নির্দেশক নীতির উদ্ভাবন করেছিলেন । তাই তিনি প্রশংসার যোগ্য ।
আরও পড়ুন- ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারে খ্রিস্টান মিশনারীদের ভূমিকা
আজকের এই পোস্টে আমরা অশোকের ধম্ম নীতি নিয়ে আলোচনা করলাম । আশা করি পোস্ট টি আপনাদের ভালো লেগেছে । যদি আপনাদের মনে আরও কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে নীচে কমেন্ট করুন ।
Good web site you have here.. It’s hard to find excellent writing like yours these days. I seriously appreciate people like you! Take care!!